মুরগি গৃহপালিত পাখিদের মধ্যে অন্যতম। এর মাংস ও ডিম প্রোটিনের অন্যতম উৎস। এরা ১০-১২ ফুটের বেশি উড়তে পারেনা। একবারে ১২-২০ টি ডিম পাড়ে ও তা দিয়ে বাচ্চা ফুটায়। যার জীবনকাল ৫-১০ বছর।
২০১৮ সালের হিসাবে সারা পৃথিবীতে ২৩.৭ বিলিয়ন তথা ২৩৭০ কোটি মুরগি ছিলো। পুর্বে ২০১১ সালে ১৯ কোটিরও বেশি ছিল। অন্য সব পাখির চাইতে মুরগির সংখ্যা বেশি।
এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকার মতে বন্য মুরগিকে পোষ মানিয়ে গৃহপালিত করার কাজটা প্রথম হয়েছিলো ভারতীয় উপমহাদেশে। তবে শুরুতে তা করা হয়েছিলো খাদ্যের জন্য না, বরং মোরগ লড়াই এর জন্য। ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে মুরগিপালন ছড়িয়ে পড়ে পশ্চিম এশিয়ার পারস্য রাজ্য লিডিয়াতে। খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতকে গ্রিসে সেখান থেকে মুরগি আমদানি করা হয়। মিশরে মুরগিপালন শুরু হয় সেখানকার ১৮শ রাজবংশের সময়কালে, আর ৩য় তুতমোসের সময়ের ইতিহাস অনুসারে এই প্রথা এসেছিলো সিরিয়া ও ব্যাবিলন হয়ে। আসিল, ফাউমি,রোড আইল্যান্ড রে্,সোনালী,হোয়াইট লেগহর্ন ইত্যাদি উল্লেখযগ্য। চট্টগ্রাম এলাকায় মুরগি নামে অবিহিত করা হয়
নাম তালিকা
একটি পূর্ণ বা প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষকে মোরগ এবং প্রাপ্তবয়স্ক নারীকে মুরগি বলে।
ব্যুৎপত্তি
মেরিয়ামিয়াম-ওয়েস্টার অনুসারে, মূল শব্দ “মোরগ” এর যৌন অভিব্যক্তি এড়ানোর জন্য “মোরগ” (অর্থাত্ একটি মুরগি পাখি) শব্দটি ১৮ শতাব্দীর শেষের দিকে অভিজাত হিসাবে উদ্ভূত হয়েছিল এবং উত্তর আমেরিকা জুড়ে বহুল ব্যবহৃত হয়। “রুস্টিং” হ’ল রাতে ঘুমানোর জন্য পার্চিংয়ের ক্রিয়া, যা উভয় লিঙ্গই করে।
সাধারণ জীববিজ্ঞান
মুরগি সর্বকোষ বন্য অঞ্চলে, তারা প্রায়শই টিকটিকি, ছোট সাপ, [২৪] বা কচি ইঁদুরের মতো বৃহত বীজ, পোকামাকড় এবং এমনকী প্রাণী অনুসন্ধান করতে মাটিতে আঁচড় কাটে।
জাতের উপর নির্ভর করে মুরগি গড়ে পাঁচ থেকে দশ বছর বেঁচে থাকতে পারে কিনা গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস অনুসারে বিশ্বের প্রাচীনতম মুরগি হলো হেন যা ১৬ বছর বয়সে হৃদযন্ত্রের কারণে মারা যায়।
মোরগর সাথে সাধারণত দীর্ঘ প্রবাহমান লেজ এবং চকচকে, তাদের ঘাড়ে এবং পিঠের পালক, যা একই জাতের মহিলাদের তুলনায় উজ্জ্বল, গা উজ্জ্বল,মোটা বর্ণের হয় তার মাধ্যমে মুরগির থেকে আলাদা করা যায়। তবে সেব্রাইট মুরগির মতো কয়েকটি প্রজাতির মোরগের ঘাড়ের পালক কেবল সামান্য রয়েছে, মুরগীর মতো একই রঙের। ঝুঁটি দেখে বা শেষ পর্যন্ত পুরুষের পায়ে স্পার্সের বিকাশ থেকে চিহ্নিত করা যেতে পারে (কয়েকটি জাত এবং কয়েকটি সংকর জাতের মধ্যেই পুরুষ ও স্ত্রী ছানা বর্ণের সাথে আলাদা হতে পারে)। প্রাপ্তবয়স্ক মুরগির মাথার উপর একটি মাংসল ক্রেস্ট থাকে যার নাম ঝুঁটি , বা ককসকম্ব, এবং চামড়ার দু’পাশে ঝুলন্ত ঝাপটায় যা তাদের ওয়াটলস( কুক্কুটাদি পাখির মাথার উপরে বা কণ্ঠে মাংসল উপাঙ্গবিশেষ)বলে। সম্মিলিতভাবে, এই এবং মাথার এবং গলার অন্যান্য মাংসল প্রবণতাগুলিকে অতিরিক্ত মাংসপিণ্ড বলা হয়। প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ ও স্ত্রী উভয়েরই ওয়াটলেট এবং ঝুঁটি থাকে তবে বেশিরভাগ প্রজাতির মধ্যে এগুলি পুরুষদের মধ্যে আরও বিশিষ্ট। একটি মাফ বা দাড়ি হলো এমন এক রূপান্তর যা বিভিন্ন মুরগির জাতের মধ্যে পাওয়া যায় যা মুরগির মুখের নীচে অতিরিক্ত পালক সৃষ্টি করে এবং দাড়ির চেহারা দেয়। গার্হস্থ্য মুরগি দীর্ঘ-দূরত্বের উড়ার পক্ষে সক্ষম নয়, যদিও হালকা মুরগি সাধারণত বেড়া বা গাছের (যেখানে তারা প্রাকৃতিকভাবে বিশ্রাম করবে) যেমন স্বল্প দূরত্বের জন্য উড়তে সক্ষম হয়। মুরগি তাদের আশেপাশের স্থানগুলি ঘুরে দেখার জন্য মাঝে মাঝে সংক্ষিপ্তভাবে উড়তে পারে তবে সাধারণত কেবল অনুভূত বিপদ থেকে পালাতেই এটি করে।
ব্যবহার
সামাজিক ব্যবহার
মুরগি দলবদ্ধভাবে থাকে এমন একঝাঁক পাখির দল। ডিমের উৎপাদন এবং বাচ্চাদের উত্থাপন সম্পর্কে তাদের সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। ঝাঁকের মধ্যে একটি মুরগি অন্যদের উপর প্রভাব ফেলবে, প্রভাবশালী ব্যক্তিদের খাদ্যে নিজের অধিকার এবং নীড়ের জায়গাগুলির জন্য অগ্রাধিকার পাবে এমন একটি নিয়ম প্রতিষ্ঠা করে। দল থেকে মোরগ বা মুরগীদের অপসারণ করা এই সামাজিক ব্যবস্থায় সাময়িক ব্যাঘাত ঘটায়। একটি বিদ্যমান পালে মুরগি, বিশেষত কম বয়সী পাখি যুক্ত করা লড়াই এবং আঘাতের কারণ হতে পারে। যখন কোনও মোরগ খাবার খুঁজে পায়, তখন সে অন্য মুরগিকে প্রথমে খেতে ডাকতে পারে। তিনি একটি উচ্চ পিচে আটকে যাওয়ার পাশাপাশি খাবার বাছাই করে এবং খাবারটি ফেলে যায় এই আচরণটি মুরগিগুলিতে তাদের বাচ্চাদের ডাকতে এবং তাদের খেতে উৎসাহিত করতেও লক্ষ করা যায়।
একটি মুরগির কর্কশ ডাক একটি উচ্চস্বরে এবং কখনও কখনও নরম ডাক হয় এবং অন্যান্য মোরগকে একটি আঞ্চলিক সংকেত প্রেরণ করে যাইহোক, মুরগিরা তাদের আশেপাশে হঠাৎ অশান্তির প্রতিক্রিয়ায় কাকের উপস্থিতি থাকতে পারে। ডিম দেওয়ার পরে মুরগী জোরে জোরে আটকে থাকে এবং তাদের বাচ্চাদের ডাকতেও ডাকে। মুরগিগুলি যখন বায়ু থেকে বা মাটিতে কোনও শিকারী কাছে আসে তখন তারা বিভিন্ন সতর্কতামূলক ডাক দেয় ।
ধ্বনি বা আওয়াজ
মোরগ প্রায় চারমাস বয়সেই কর্ক্শভাবে ডাকাডাকি শুরু করে।মুরগির পক্ষেও কর্কশভাবে ডাকা সম্ভব।এই কর্কশস্বরে ডাকা মোরগ হওয়ার অন্যতম প্রধা্ন লক্ষণ।
মোরগের ডাকাডাকি বা আওয়াজের প্রতিযোগিতা
জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইন্দোনেশিয়া এবং জাপানের মতো বেশ কয়েকটি দেশে মোরগের ডাকাডাকি প্রতিযোগিতা একটি ঐতিহ্যবাহী খেলা। পুরানো প্রতিযোগিতাটি দীর্ঘ ডাক দেয়া বা আওয়াজকারি মোরগের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়। শাবকের উপর নির্ভর করে, হয় ডাকের বা আওয়াজের সময়কাল বা একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মোরগের ডাকের বা আওয়াজের সময়কে পরিমাপ করা হয়।
মুরগির আবাসস্থল
যেহেতু মাটিতে পোকামাকড়, বীজ বা অন্যান খাবার সহজেই পাওয়া যায় তাই মুরগি সাধারনত মাটিতেই বসবাস করে। তবে অপেশাদার খামারী বা অধুনিক পোল্টি খামারে মাচায় বা ঘরের মধ্যে মুরগি পালন হয়। আসলে গ্রাম থেকে শুরু করে শহরের কেন্দ্রস্থল কোথাও এর সমাদরের কমতি নেই। বড় বড় অট্টালিকার ছাদেও গড়ে ওঠেছে জীবন্ত এ শিল্প; যা থেকে পূরণ হচ্ছে দেশের পুষ্টি, বিশেষ করে আমিষের চাহিদা। পাশাপাশি আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে বেকারত্বের এক বিরাট অংশ।
মুরগির দেহের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ
মুরগির দেহের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ এবং এর আচরণের ওপর শরীরের অবস্থা উপলব্দি করা যায়। মুরগি কীভাবে চেনা যায় তা একেক করে এবার জেনে নেয়া যাক।
মাথার অংশ :
বেশি ডিম দেয়া মুরগির মাথা হবে ছোট, হালকা এবং মাংশল অংশ থাকবে কম। মাথার ঝুঁটি ও গলার ফুল হবে উজ্জ্বল লাল রঙ কিংবা গোলাপি বর্ণের। তবে এগুলো অবশ্যই নরম, সুগঠিত ও প্রস্ফুটিত হবে।
চোখ, নাক ও মুখ :
পাখির চোখের বর্ণ হবে উজ্জ্বল। চোখ সব সময় সতর্ক থাকবে। নাক ও মুখ থাকবে শ্লেষ্মাহীন পরিষ্কার। নাক দিয়ে সর্দিঝরা কিংবা গলার ভেতর ঘড়ঘড় শব্দ হবে না।
দেহ বা শরীর :
মুরগির দেহ সুগঠিত হবে। পরিমাণমতো খাদ্য এবং পানি পান করবে, যে কারণে খাদ্য থলিতে খাবারে ভর্তি থাকবে। পেটে ডিম অনুভব হলে অবশ্যই ওজনে ভারি হবে। এ ধরনের মুরগির পিঠ হয় লম্বা ও প্রশস্ত। শরীরের কোনো অংশে খুঁত, অপূর্ণতা অথবা বিকলাঙ্গ হবে না।
পালক :
সুস্থ অবস্থায় মুরগির পালক উজ্জ্বল ও সুবিন্যস্ত থাকে। এ ধরনের মুরগি সাধারণত মার্চ মাসের দিকে পালক পাল্টায়। তবে মাথার উপরিভাগের পালক শূন্য হয়ে টাকের সৃষ্টি হয়।
বয়স :
মুরগির বয়স বাড়ার সাথে সাথে ডিম উৎপাদনের হার তুলনামূলকভাবে কমে যায়। সাধারণত ৫৬০ দিন বয়স পর্যন্ত মুরগি মোট উৎপাদনের শতকরা প্রায় ৬০ ভাগ ডিম দেয়। তাই বয়স্ক মুরগি খাবারের জন্য বিক্রি করে খামারে নতুন মুরগি তোলা উচিত।
চঞ্চল ও সতর্কতা :
স্বাস্থ্যবান মুরগি সব সময় চঞ্চল থকে এবং খাবার খুঁজতে ব্যস্ত মনে হয়। হঠাৎ কোনো শব্দ হলে অথবা শত্রুর উপস্থিত বুঝতে পারলে মুখে এক ধরনের শব্দ করে স্বজাতিকে সতর্ক করে দেয়। কেউ ধরতে গেলে দৌড়ে পালায়।
পা :
সুস্থ মুরগির পা থাকবে সুন্দর ও সুগঠিত। মুরগির পা’র মাধ্যমে স্বাভাবিকভাবে হাঁটাহাঁটি করবে।
মলদ্বার এবং পাছার হাড় :
ডিম পাড়া মুরগির মালদ্বার হবে প্রশস্ত ও ডিম্বাকৃতি। পরীক্ষা করলে সেখানে আর্দ্র ও রক্তাভ দেখাবে। মলদ্বারের উভয় পাশে হাত দিলে পাছার হাড় অনুভব করা যায়। উৎপাদনশীল মুরগির দুই হাড়ের মধ্যবর্তী দূরত্ব হবে দুই ইঞ্চি।
তলপেট :
মুরগির তলপেটে হাত দিয়ে বুঝা যাবে এর ডিম ধারণের ক্ষমতা। ডিম দেয়া অবস্থায় তলপেট প্রশস্ত ও নরম থাকে । মুরগি ডিম পাড়া অবস্থায় বুকের হাড়ের নি¤œভাগ এবং পাছার উভয় হাড়ের মাথা পর্যন্ত দূরত্ব হবে দুই ইঞ্চি। মুরগির তলপেটে মেদ থাকবে না এবং চাপ দিলে পেটের ভেতর ডিম অনুভব হবে।
চামড়া :
উৎপাদনশীল মুরগির চামড়ার নিচে কোনো মেদ জমা থাকবে না। চামড়া হবে পাতলা ও নরম।
দাঁড়ানোর ভঙ্গি :
সুস্থ অবস্থায় মুরগির দাঁড়ানোর ভঙ্গি স্বাভাবিক থাকে। পাখি দৃঢ়ভাবে দাঁড়াবে।
রঙ পরিবর্তন :
ডিম পাড়ার সাথে সাথে মলদ্বার, ঠোঁট, ঝুঁটি, গলার ফুল ও পায়ের রঙ পরিবর্তন হতে শুরু করে। রঙ পরিবর্তন শেষ হলে বুঝতে হবে ডিম পাড়ার সময় শেষ।
ব্যবহার ও আচরণ :
মুরগির আচরণ সাধারনত ভদ্র, চঞ্চল ও সতর্ক। এরা ডিম পাড়ার সময় বাসায় ঢুকে ডিম দেয়, কোনো সময় অলস বসে থাকে না। ডিম পাড়া মুরগির পিঠে হাত রাখলে সহজেই বসে পড়বে।
বানিজ্যিক খামারে পশুপাখির বিছানা খুব গুরুত্বপূর্ণ বকলে বিবেচনা করা হয়। ঘরের মেঝেতে মোরগ-মুরগির মলমূত্র লেপ্টে যেন না যায় সেজন্য কাঠের গুঁড়া, ধানের তুষ, ছাই এসব দিয়ে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে বিছানা তৈরি করা হয়। এ ধরনের বিছানাকে বলে লিটার। লিটার পুরু করে দিলে তাকে বলে ডিপ লিটার। লিটারে ব্রয়লার আর ডিপ লিটারে লেয়ার মুরগি পালন করা হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইউরোপে শ্রমিকের ঘাটতি দেখা দেয়। ফলে মুরগি খামারিদের প্রতিদিন ঘর পরিষ্কারে বেশ সমস্যায় পড়তে হয়। তাই এসব ঝামেলা এড়াতে তখন তারা ঘরের মেঝেতে পুরু করে খড় বিছিয়ে রাখত। ওই সময় থেকেই ডিপ লিটার পদ্ধতির প্রচলন শুরু হয়। বর্তমানে এর জনপ্রিয়তা বিরাজমান।
মুরগি পালনের কারণ
কৃষিকাজের জন্য পালন
আমেরিকা
মাংস এবং ডিমের উৎস হিসাবে প্রতিবছর ৫০ বিলিয়নেরও বেশি মুরগি পালন করা হয়। একমাত্র যুক্তরাষ্ট্রে মাংসের জন্য প্রতিবছর ৮ বিলিয়নেরও বেশি মুরগি জবাই করা হয় এবং ডিম উৎপাদনের জন্য ৩০০ মিলিয়নেরও বেশি মুরগি পালন করা হয়।
বাংলাদেশ
বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে দেশে ডিমের উৎপাদন ছিল ১ হাজার ৯৯ কোটি ৫২ লাখ। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১ হাজার ৭৮১ কোটি ডিম উৎপাদিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মাংসের জন্য পালন
মাংসের জন্য চাষ করা মুরগিগুলিকে ব্রোকার বলা হয়। মুরগি স্বাভাবিকভাবে ছয় বা আরও বেশি বছর বাঁচে। তবে ব্রোলার জাতগুলি সাধারণত ছয় সপ্তাহেরও কম সময় নেয়।
বাংলাদেশের গ্রাম এলাকায় প্রায় প্রতিটি পরিবার দেশী মুরগি পালন করে থাকে। এদের উৎপাদন ক্ষমতা বিদেশী মুরগির চেয়ে কম। উৎপাদন ব্যয়ও অতি নগণ্য। এটি অধিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন। এদের মাংসর মূল্য বিদেশী মুরগীর তুলনায় খুবই বেশি। দেশী মুরগির মৃত্যুহার বাচ্চা বয়সে অধিক এবং অপুষ্টিজনিত কারণে উৎপাদন আশানুরূপ নয়।
ডিমের জন্য লালন
প্রাথমিকভাবে ডিমের জন্য চাষ করা মুরগিগুলিকে লেয়ার মুরগি বলা হয়। বাংলাদেশের গ্রাম এলাকায় প্রায় প্রতিটি পরিবার দেশী মুরগি পালন করে থাকে। এদের উৎপাদন ক্ষমতা বিদেশী মুরগির চেয়ে কম। তবে উৎপাদন ব্যয়ও অতি নগণ্য। এটি অধিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন। এদের মাংস ও ডিমের মূল্য বিদেশী মুরগীর তুলনায় দ্বিগুণ, এর চাহিদাও খুবই বেশি।
একটি মুরগি ডিম পাড়ার জন্য ২০ -২৪দিন সময় নেয় । ডিম থেকে বাচ্চা ফুটানোর জন্য ২১ দিন সময় নেয় । বাচ্চা লালন পালন করে বড় করে তোলার জন্য ৯০-১১০ দিন সময় নেয় । ডিম থেকে এ ভাবে (৯০-১১০ দিন ) বাচ্চা বড় করা পর্যন্ত একটি দেশী মুরগির উৎপাদন চক্র শেষ করতে স্বাভাবিক অবস্থায় ১২০- ১৩০ দিন সময় লাগে।
মোরগ লড়াই
একসময় ভারত সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাজা-বাদশা মোরগ পুষতেন শুধু মাত্র মোরগ লড়াইএর জন্য। টিপু সুলতান, সম্রাট আকবরসহ অনেক রাজা এই মোরগগুলো শখ করে পুষতেন। এদের লড়াই দেখাটাকে বিনোদনের অংশ হিসেবে নিতেন। পুয়ের্তো রিকোর জাতীয় খেলা মোরগ লড়াই। ভারত, পাকিস্তান, মিয়ানমার, জাপানেও এই খেলার প্রচলন রয়েছে।
তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া